গীবত নিয়ে ইসলামিক উক্তি, স্ট্যাটাস ও কিছু কথা

By Ayan

Published on:

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা, যা মানুষের প্রতিটি আচরণ ও কথাবার্তার জন্য সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা প্রদান করেছে। তেমনি একটি নিষিদ্ধ ও ঘৃণিত কাজ হলো গীবত (পরনিন্দা), যা কুরআন ও হাদীসের আলোকে একটি মারাত্মক গুনাহ হিসেবে বিবেচিত। গীবত মানুষের সম্মান ক্ষুণ্ন করে, সমাজে বিভেদ সৃষ্টি করে এবং ইসলামী ভ্রাতৃত্ববোধকে নষ্ট করে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা গীবতের সঙ্গে মৃত ভাইয়ের গোশত ভক্ষণ করার বিষয়টি তুলনা করে ভয়ানকভাবে সতর্ক করেছেন। এই লেখায় আমরা তুলে ধরবো কিছু মূল্যবান ও চিন্তনীয় গীবত নিয়ে ইসলামিক উক্তি, যা আমাদের সচেতন করবে এবং এই মারাত্মক গুনাহ থেকে দূরে থাকতে উৎসাহিত করবে।

গীবত নিয়ে ইসলামিক উক্তি

“গীবত হচ্ছে সেই পাপ, যা মানুষকে বিনা কারণে অপরের পাপের ভার বইয়ে দেয়।”

“যে ব্যক্তি গীবত করে, সে মৃত ভাইয়ের মাংস খাওয়ার মতো জঘন্য কাজ করছে। (কুরআন শরীফ)”

“গীবত করার আগে ভাবো, তুমি কি চাইবে কেউ তোমার অনুপস্থিতিতে তোমার দোষ বলে?”

“গীবতের মাধ্যমে মানুষ তার নেক আমল অন্যের ঝুলিতে দিয়ে আসে।”

“গীবত শুধু সম্পর্ক নষ্ট করে না, নিজের আমলনামাও কলঙ্কিত করে।”

“যে নিজের দোষ দেখে, তার আর অন্যের গীবত করার সময় থাকে না।”

“গীবতের কথা মুখে তৃপ্তি দিলেও, কিয়ামতের দিনে সেটা বিষে পরিণত হবে।”

“পরনিন্দা এমন এক আগুন, যা নেক আমলকে পুড়িয়ে ছাই করে দেয়।”

“গীবত এমন এক ঋণ, যা কিয়ামতের দিনে নেক আমল দিয়ে শোধ করতে হবে।”

“যে ব্যক্তি গীবত করে, সে নিজের দোয়া কবুল হওয়ার দরজা নিজ হাতে বন্ধ করে দেয়।”

“গীবত করা সহজ, কিন্তু তার শাস্তি সহ্য করা অসম্ভব কঠিন।”

“পরের দোষ খুঁজে বেড়ানোর চেয়ে নিজের দোষ শোধরানোই শ্রেয়।”

“যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের অভাবের কথা তার অনুপস্থিতিতে বলে, সে গীবতকারী।”— মুসলিম, হাদীস ২৫৮৯

“গীবত ব্যভিচারের চেয়েও ভয়ংকর।”— আবু দাউদ, হাদীস ৪৮৭৫

“যে ব্যক্তি গীবত থেকে বেঁচে থাকে, সে জান্নাতের নিশ্চয়তা পেতে পারে।”— তিরমিযি, হাদীস ২০০৬

“গীবত এমন এক কাজ যা সওয়াব নষ্ট করে দেয় ঠিক যেমন আগুন কাঠ পোড়ায়।”— বায়হাকী

“গীবত থেকে দূরে থাকো, এটি তোমার আমল ধ্বংস করে দেয়।”— ইসলামিক শিক্ষার মূলনীতি

“যে ব্যক্তি অন্যের গীবত করে, সে যেন নিজের ভালো কাজ অন্যকে দান করে।”— ইবনে কাসীর

“তোমরা মুখে যেটা বলো না, অন্তরে সেটাই রেখো— আর গীবত থেকে বিরত থাকো।”— সূরা বাকারাহ, আয়াত ৪৪

“মুমিন কখনোই গীবতকারী বা পরনিন্দাকারী হতে পারে না।”— সহীহ বুখারী

“তোমরা এমন কথা বলো না যা অন্যকে অপমান করে এবং তার অনুপস্থিতিতে যা বলা হয় তা গীবত।”— সূরা হুজুরাত, আয়াত ১১-১২

আল্লাহ উত্তম পরিকল্পনাকারী উক্তি ও স্ট্যাটাস

গীবত নিয়ে স্ট্যাটাস

🕊️ নিজের আমলনামা রক্ষা করতে চাইলে, গীবতের বিষ থেকে দূরে থাকো।

📖 গীবত শুধু জিহ্বার পাপ নয়, এটা ঈমানকেও খেয়ে ফেলে।

🗣️ অন্যের দোষ বলা সহজ, কিন্তু নিজের দোষ দেখা ইবাদত।

⚖️ গীবতের প্রতিটি কথা কিয়ামতের দিন বিচার দিবসে সাক্ষী দেবে।

🤐 যে জিহ্বা গীবত থেকে বাঁচে, সে-ই জান্নাতের পথে সহজে হাঁটে।

💔 গীবতের মাধ্যমে অন্যের চরিত্র হত্যা করার আগে নিজের আমলনামা দেখো।

⏳ গীবত সাময়িক আনন্দ, কিন্তু আখিরাতে অসহনীয় শাস্তি।

🧕 মুমিন কখনো ভাইয়ের পেছনে দোষ খোঁজে না, বরং দোয়া করে।

✋ গীবত করা মানে নিজের নেকি নিজ হাতে নষ্ট করা।

সুদ নিয়ে উক্তি ১২টি

গীবত নিয়ে কিছু কথা

গীবত করার আগে একবার ভাবো, তুমি কি চাইবে কেউ তোমার অনুপস্থিতিতে তোমার দোষ আলোচনা করুক?

গীবত মানুষের আমলনামা থেকে নেকি কেটে অন্যের আমলনামায় পাঠিয়ে দেয়।

যে নিজের দোষ নিয়ে ব্যস্ত থাকে, সে কখনোই অন্যের দোষ খোঁজার সময় পায় না।

গীবত করা শুধু সম্পর্ক নষ্ট করে না, আল্লাহর কাছে নিজের সম্মানকেও ছোট করে দেয়।

গীবত শুনে চুপ থাকাও সমানভাবে গুনাহ। অন্যায়ের প্রতিবাদ করো।

পরনিন্দার সময় জিহ্বা হাসে, কিন্তু কিয়ামতের দিনে চোখ কাঁদবে।

গীবত হলো এমন এক ঋণ, যা নেক আমল দিয়ে শোধ করতে হয়।

অন্যের পেছনে কথা বলা সহজ, কিন্তু তার সামনে গিয়ে বোঝানোই প্রকৃত ইসলামী আচরণ।

যে মানুষ গীবত করে, সে নিজের ঈমানকেই প্রতিনিয়ত দুর্বল করে ফেলে।

গীবতের পেছনে সময় নষ্ট করার বদলে নিজের চরিত্র গড়ে তুলো, তবেই সফলতা আসবে।

উপসংহার

গীবত কেবল একজন মানুষের সম্মানহানিই করে না, বরং একজন মুসলমানের আখিরাতকেও ধ্বংসের পথে ঠেলে দেয়। ইসলাম বারবার আমাদেরকে গীবতের ক্ষতি সম্পর্কে সতর্ক করেছে এবং পরস্পরের মর্যাদা রক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছে। উপরোক্ত গীবত নিয়ে ইসলামিক উক্তি গুলো আমাদেরকে সেই মূল্যবান শিক্ষা দেয়, যাতে আমরা জবানকে নিয়ন্ত্রণে রাখি এবং আল্লাহর ভয় অন্তরে স্থান দিই। আসুন, আমরা নিজেদের পরিশুদ্ধ করি এবং গীবত পরিহার করে ইসলামের সত্যিকারের আদর্শে চলার চেষ্টা করি।

Ayan

আয়ান, বাংলা ভাষার প্রেমে পড়া একজন সৃজনশীল লেখক, যিনি মনোমুগ্ধকর ক্যাপশন, স্ট্যাটাস ও উক্তি লিখে পাঠকদের মন জয় করেন। শব্দের মাধ্যমে আবেগ প্রকাশ করাই তাঁর অন্যতম নেশা। ভালোবাসা, অনুপ্রেরণা, বন্ধুত্ব, হাসি-মজা—সব ধরনের ক্যাপশন লেখার ক্ষেত্রে তাঁর দক্ষতা অসাধারণ। পছন্দের বিষয়: ক্যাপশন রচনা, সাহিত্য, উক্তি ও জীবন দর্শন।

Leave a Comment