পরকাল নিয়ে উক্তি

By Ayan

Published on:

পরকাল — এক শব্দ, কিন্তু যার ভার বহন করে চিরস্থায়ী জীবনের হিসাব। এই দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী, যেখানে আমরা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি; আর মৃত্যুর পরে শুরু হবে সেই অনন্ত জীবন, যার নাম আখিরাত বা পরকাল। এই পরকালের বিশ্বাসই একজন মুমিনকে গুনাহ থেকে ফেরায়, সত্য পথে চলায়, আর মানুষ হিসেবে পরিপূর্ণ করে তোলে।

পরকাল নিয়ে কিছু গভীর ও উপলব্ধির উক্তি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় — সময় খুব কম, আর ফেরার পথ নিশ্চিত। এই লেখায় তেমনই কিছু হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া কথামালা তুলে ধরা হলো, যা আমাদের মনে করিয়ে দেয় জীবনের আসল লক্ষ্য কী হওয়া উচিত।

“পরকালের প্রস্তুতি দুনিয়ার কাজের চেয়েও জরুরি, কারণ সেখানে শুধুই হিসাব — সংশোধনের সুযোগ নেই।”

“দুনিয়া আমরা সাজাই মানুষ দেখানোর জন্য, আর পরকাল সাজাতে হয় একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য।”

“যে ব্যক্তি অণু পরিমাণ সৎকাজ করবে সে তা দেখতে পাবে, আর যে অণু পরিমাণ মন্দ কাজ করবে, সেও তা দেখতে পাবে।”— (কুরআন, সূরা যিলযাল 99:7-8)

“প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যু স্বাদ গ্রহণ করতে হবে, আর তোমাদেরকে কিয়ামতের দিন তোমাদের পূর্ণ প্রতিদান দেয়া হবে।”— (কুরআন, সূরা আলে ইমরান 3:185)

“আজ তোমাদের সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি কোনো কাজে আসবে না, কাজ আসবে শুধু সেই অন্তর, যা আল্লাহর কাছে পবিত্র অবস্থায় পৌঁছাবে।”— (কুরআন, সূরা আশ-শু‘আরা 26:88-89)

“দুনিয়া হলো মুমিনের জন্য কারাগার এবং কাফেরের জন্য জান্নাত।”— (সহিহ মুসলিম, হাদিস 2956)

“পরকালের হিসাবের দিন আল্লাহর ভয় না থাকলে মানুষ সীমাহীন অন্যায়ে ডুবে যেত।”— (সহিহ বুখারি, হাদিস 6539)

“যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালে ঈমান রাখে, সে যেন ভালো কথা বলে অথবা নীরব থাকে।”— (সহিহ বুখারি, হাদিস 6136; সহিহ মুসলিম, হাদিস 47)

“কিয়ামতের দিন মানুষের পদদ্বয় তার প্রতিপালকের সামনে থেকে সরে দাঁড়াবে না, যতক্ষণ না সে পাঁচটি বিষয়ে জবাব দেবে— জীবনের ব্যবহার, যৌবনের ব্যবহার, সম্পদের উৎস ও ব্যয়, এবং জ্ঞান অনুযায়ী আমল।”— (সুনান তিরমিজি, হাদিস 2417)

“যে ব্যক্তি দুনিয়াকে নিজের চূড়ান্ত লক্ষ্য বানায়, আল্লাহ তার দারিদ্র্যকে তার চোখের সামনে রাখেন, আর পরকাল থেকে সে যা কিছু পাবে, শুধু নির্ধারিত অংশই পাবে।”— (সুনান ইবন মাজাহ, হাদিস 4105)

“কিয়ামতের দিন মানুষকে তার কর্মফলসহ সমবেত করা হবে। তখন কেউ কোনো অন্যায়ের শিকার হবে না।”— (কুরআন, সূরা আলে ইমরান 3:25)

“পরকালকে স্মরণ করো, কারণ এটি পাপ থেকে বিরত রাখে এবং দুনিয়ার প্রতি অনাসক্তি সৃষ্টি করে।”— (মুসনাদ আহমদ, হাদিস 23630)

“যে ব্যক্তি পরকালের জন্য কাজ করে, তার জীবন হয় ভারসাম্যপূর্ণ ও অর্থবহ।”

“একদিন আমাদের শরীর মাটিতে মিশে যাবে, কিন্তু আমলনামা নিয়ে দাঁড়াতে হবে রবের সামনে।”

“দুনিয়ার ব্যস্ততায় যাদের চোখে পরকাল থাকে, তারাই প্রকৃত বুদ্ধিমান।”

“যে জানে তার মৃত্যু আসবে, সে গুনাহ করতে দ্বিধা করে।”

“পরকাল ভোলার অর্থ হলো নিজের আত্মাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া।”

“মৃত্যু এসে কড়া নাড়বে যখন, তখন ব্যাংক ব্যালেন্স নয়, সেজদার চিহ্নই কাজ দেবে।”

“এই দুনিয়ায় তুমি যত বড় হও না কেন, পরকালে শুধু তোমার তাকওয়া হিসাব হবে।”

“পরকালের চিন্তা থাকলে চোখে পানি আসে, আর গুনাহ করতে কাঁপুনি ধরে।”

“আল্লাহ কাউকে তার বাহ্যিক রূপ দেখে বিচার করবেন না, বরং আমল আর নিয়তের হিসাব নেবেন।”

“যে ব্যক্তি রাতের অন্ধকারে কান্না করে, আল্লাহ তাকে পরকালের আলো দান করেন।”

“জীবনকে সুন্দর করতে হলে দুনিয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরকালের জন্যও প্রস্তুতি নিতে হয়।”

“মুসলমানের সকাল শুরু হয় আখিরাতের ভয় নিয়ে, আর শেষ হয় জান্নাতের আশায়।”

“পরকালকে ভুলে দুনিয়া সাজানো অর্থহীন; কারণ চিরস্থায়ী গন্তব্য তো কবরের পরে শুরু হয়।”

মৃত্যু নিয়ে ইসলামিক উক্তি ৩৫টি

পরকাল নিয়ে ভাবা মানে নিজের অবস্থান পর্যালোচনা করা, আত্মাকে জাগিয়ে তোলা এবং জীবনের পথ সঠিকভাবে নির্ধারণ করা।
দুনিয়ার দৌড়ে আমরা যেন ভুলে না যাই—এই পথটা শেষ নয়, বরং শুরু হওয়ার অপেক্ষায় আছে এক অনন্ত জগত।

এই উক্তিগুলো আমাদের মনে করিয়ে দেয়:
একটি আমল, একটি দোয়া, একটি চোখের পানি — সবকিছুই হিসাব হবে।
তাই আসুন, এই দুনিয়ার ভেতর থেকেও আল্লাহকে মনে রেখে, পরকালের জন্য কিছু জমা রাখি।
পরকাল ভুলে দুনিয়া সাজানো ক্ষণিকের আনন্দ, আর মনে রাখলে — চিরন্তনের মুক্তির পথ।

Ayan

আয়ান, বাংলা ভাষার প্রেমে পড়া একজন সৃজনশীল লেখক, যিনি মনোমুগ্ধকর ক্যাপশন, স্ট্যাটাস ও উক্তি লিখে পাঠকদের মন জয় করেন। শব্দের মাধ্যমে আবেগ প্রকাশ করাই তাঁর অন্যতম নেশা। ভালোবাসা, অনুপ্রেরণা, বন্ধুত্ব, হাসি-মজা—সব ধরনের ক্যাপশন লেখার ক্ষেত্রে তাঁর দক্ষতা অসাধারণ। পছন্দের বিষয়: ক্যাপশন রচনা, সাহিত্য, উক্তি ও জীবন দর্শন।

Leave a Comment