অহংকার এমন একটি মানসিক বৈশিষ্ট্য, যা মানুষকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যেতে পারে। এটি আত্মপ্রবঞ্চনার জন্ম দেয় এবং সম্পর্ক ও ব্যক্তিত্বে ফাটল ধরায়। ইসলাম, হিন্দু ধর্ম বা বুদ্ধ দর্শন – প্রতিটি জীবনবোধেই অহংকারকে নেতিবাচক গুণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে নম্রতা ও বিনয় থাকলে মানুষ যেমন প্রিয় হয়, তেমনি সমাজেও সে স্থায়ী সম্মান অর্জন করে। তাই অহংকার নিয়ে উক্তি আমাদের মনে করিয়ে দেয় – আমরা যত বড়ই হই না কেন, বিনয়ই আমাদের প্রকৃত মহত্ত্বের পরিচয়। নিচে তুলে ধরা হলো অহংকার সম্পর্কে কিছু মূল্যবান উক্তি, যা আপনার চিন্তাকে নতুন মাত্রা দেবে।
এখানে আপনি পাবেন:
অহংকার নিয়ে উক্তি
“অহংকার মানুষকে অন্ধ করে তোলে, যে অন্ধ সে নিজের ধ্বংসও দেখতে পায় না।”— রেদোয়ান মাসুদ
“যে যত বেশি জানে, সে তত কম অহংকারী হয়—জ্ঞান বিনয় শেখায়।”— সক্রেটিস (অনুপ্রাণিত)
“অহংকার কখনো মানুষকে বড় করে না, বরং তাকে একা করে তোলে।”— রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (ভাবনায় অনুপ্রাণিত)
“অহংকার ধ্বংসের আগমনী বার্তা, নরম মনই সবার প্রিয়।”— হযরত আলী (রা.)
“অহংকারে ডুবে থাকা মানুষ মাটিতে পড়লে উঠে দাঁড়াতেও লজ্জা পায়।”— রেদোয়ান মাসুদ
“অহংকার ছুঁয়ে দেখে না, ধ্বংস করে দেয় নীরবে।”— অজ্ঞাত
“যার ভেতরে সত্য নেই, তার মুখেই অহংকার বেশি।”— হুমায়ুন আজাদ (অনুপ্রাণিত)
“অহংকার এমন এক বোঝা, যা নিয়ে চলতে গেলে সম্পর্ক ভেঙে যায়।”— লাও জু (অনুপ্রাণিত)
“বিনয় যেখানে শেষ হয়, অহংকার সেখান থেকেই শুরু হয়।”— মাওলানা রুমি (ভাবনায় অনুপ্রাণিত)
“অহংকারী মানুষ অন্যের নয়, নিজের দুঃখের কারণ হয়।”— চাণক্য (অনুপ্রাণিত)
“অহংকার এমন এক আগুন, যা ধীরে ধীরে নিজের ঘরই পুড়িয়ে ফেলে।”
“যে যত বেশি জানে, সে ততই নম্র হয়—অহংকার আসে জ্ঞানের ঘাটতি থেকে।”
“অহংকার করে মানুষ যতটা না বড় হয়, তারচেয়ে বেশি ছোট হয়ে পড়ে অন্যের চোখে।”
“অহংকার মানুষকে অন্ধ করে দেয়, আর বিনয় তাকে আলোয় ভরিয়ে তোলে।”
“যে নিজেকে সবথেকে বেশি মনে করে, সময় একদিন তাকে শূন্য করে দেয়।”
“অহংকার মানুষকে একা করে দেয়, আর একা মানুষ একদিন নিজেই ভেঙে পড়ে।”
“মানুষের আসল শক্তি তার নম্রতায়—অহংকারে নয়।”
“যে আজ অহংকার করে, কাল সে হয়তো কারো সাহায্যের জন্য হাত পাতবে।”
“অহংকারে সম্পর্ক ভাঙে, ভালোবাসা শুকিয়ে যায়, আর মন হয়ে পড়ে শূন্য।”
“অহংকারে জয় সম্ভব হলেও, হৃদয় জয় করা যায় না—সেখানে দরকার বিনয়।”
অহংকার নিয়ে স্ট্যাটাস
অহংকার মানুষকে অন্ধ করে তোলে, আর সময় একদিন তাকে চশমা পরিয়েও শিক্ষা দেয়।
যে অহংকারে কথা বলে, সে নিজেকে বড় ভাবে, কিন্তু চোখে পড়ে না—সে কতটা একা হয়ে যাচ্ছে।
অহংকার মানুষকে অন্যের ওপরে তুললেও, শেষমেশ সেই মানুষটাই নিচে পড়ে যায়।
তোমার টাকা, তোমার সৌন্দর্য, তোমার সাফল্য—সবই সময়ের। অহংকার করলে হারাতে বেশি সময় লাগে না।
বিনয়ী মানুষকে সবাই মনে রাখে, আর অহংকারী মানুষকে সবাই মনে রেখে এড়িয়ে চলে।
অহংকার করতে করতে মানুষ ভুলে যায়—পৃথিবী ঘোরে তার চারপাশে নয়।
নিজেকে বড় মনে করলেই কেউ বড় হয়ে যায় না, আসল বড়ত্ব আসে নম্রতা আর ভালো ব্যবহারে।
যে যত বড় হয়, সে তত নত হয়—কারণ অহংকার নয়, বিনয়ই আসল মহত্ব।
যার ভেতরে কিছু নেই, সেই মানুষটাই সবচেয়ে বেশি শব্দ করে অহংকারে।
সময় চুপচাপ থাকে না, অহংকারীকে একদিন সে ঠিকই থামিয়ে দেয়, তাও এমনভাবে যে সে বুঝতেই পারে না।
অহংকার নিয়ে ক্যাপশন
🔥 অহংকারে কেউ বড় হয় না, শুধু মানুষের চোখে ছোট হয়ে যায়। 👎
🧠 বুদ্ধি কম হলে মানুষ বেশি কথা বলে, আর অহংকারে সেটা বোঝা যায়। 🤐
😌 যে অহংকার করে, সে মানুষ না—সময় তাকে ঠিকই মানুষ বানিয়ে দেয়। ⏳
💣 অহংকার এমন বিষ, যা মানুষ নিজের ভেতরেই ছড়িয়ে দেয়। ☠️
🧍♂️ তোমার অবস্থান বড় হতে পারে, কিন্তু ব্যবহারেই বোঝা যায় তুমি কতটা নিচু। ⚖️
🙄 অহংকারী মানুষদের সবচেয়ে বড় শিক্ষা দেয় সময়—তাও খুব নীরবে। ⏰
💔 অহংকার সম্পর্ক ভাঙে, আত্মসম্মান নয়।
🗣️ নিজের দাম বাড়াতে চুপ থাকো, অহংকারে নয়—তাতে মূল্যই পড়ে যায়। 🧱
👑 তোমার টাকায় নয়, ব্যবহারেই মানুষ তোমাকে শ্রদ্ধা করে। অহংকারে নয়। 🪞
🌪️ অহংকার যত বড়, পতন তত কঠিন—এটাই প্রকৃতির নিয়ম। ⚠️
অহংকার নিয়ে ইসলামিক উক্তি
“যে ব্যক্তি তার অন্তরে একটি সরিষার দানা পরিমাণ অহংকার ধারণ করে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।”— সহীহ মুসলিম
“আল্লাহ অহংকারী ও দাম্ভিকদের পছন্দ করেন না।”— সূরা লুকমান: ১৮
“অহংকার মূলত সেই চেহারাকে নিচু করে দেয়, যা মনে করে সে আকাশের সমান উচ্চ।”— ইবনে কায়্যিম (রহ.)
“তুমি যা কিছু করেছো, সবই আল্লাহর ইচ্ছায়। অহংকার করার কিছুই তোমার নিজের নয়।”
“যে ব্যক্তি নিজেকে বড় ভাবে, আল্লাহ তাকে অপমান করে ছেড়ে দেন।”
“মাটির তৈরি মানুষ হয়ে, মাটির উপর চলাফেরা করে; অথচ অহংকার করে! কত দুঃখজনক!”
“আল্লাহ বলেন, গর্ব আমার চাদর এবং অহংকার আমার আবরণ; যে এতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে, আমি তাকে ধ্বংস করব।”— সহীহ মুসলিম
“অহংকার আল্লাহর জন্য, বান্দার জন্য নয়। বান্দা যত বিনয়ী হবে, ততই মর্যাদাবান হবে।”
“আল্লাহ যাকে হিদায়াত দেন, সে কখনো অহংকার করতে পারে না; কারণ সে জানে, সবকিছুই আল্লাহর দান।”
“বুদ্ধিমান সেই, যে অহংকারের আগুন নেভাতে বিনয়ের পানি ব্যবহার করে।”
টাকার অহংকার নিয়ে উক্তি
“টাকার পরিমাণ বাড়লেই মানুষ বড় হয় না, বরং অহংকার বাড়লে সে আসলে ছোট হয়।”
“যার টাকা ছাড়া কিছুই নেই, তার মধ্যে আসলে কিছুই নেই—শুধু টাকার গর্ব।”
“টাকার অহংকার এমন জিনিস, যা একদিন নিজের মানসিক দেউলিয়াতেই নিয়ে যায়।”
“টাকায় দেহ কেনা যায়, মন নয়—তাই টাকার গর্বে মানুষকে ছোট ভাবা বোকামি।”
“যে টাকার অহংকার করে, সে ভুলে যায়—সময় একদিন সব হিসাব বুঝিয়ে দেয়।”
“টাকা কখনো মানুষের চরিত্র তৈরি করে না, বরং চরিত্র জানালেই টাকার ব্যবহার বোঝা যায়।”
“আজ যার টাকায় তুমি উপেক্ষিত, কাল তাকেই হয়তো সাহায্য করবে তুমি—সময় ঘুরতে দেরি হয় না।”
“টাকা থাকার গর্ব করো না, কারণ একটা অসুখই তোমাকে বুঝিয়ে দেবে—মানুষই আসল সম্পদ।”
“টাকার গরমে যাদের চোখে অহংকার, তাদের হৃদয়ে ভালোবাসা কখনো থাকে না।”
“টাকায় সম্মান নয়, সুযোগ কেনা যায়—সম্মান আসে আচরণ আর বিনয় থেকে।”
নারীর অহংকার নিয়ে উক্তি
“যে নারী নিজের সৌন্দর্যে অহংকার করে, সে কখনো হৃদয়ের সৌন্দর্য বুঝে না।”
“অহংকারী নারী চেহারায় মানুষকে মুগ্ধ করলেও, আচরণে সবাইকে দূরে ঠেলে দেয়।”
“নারীর আসল শক্তি তার নম্রতায়, অহংকারে নয়। অহংকার তাকে বড় নয়, একা করে তোলে।”
“যে নারী নিজের টাকায় গর্ব করে, সে ভুলে যায়—টাকা শেষ হলেও মূল্যবোধ বাঁচিয়ে রাখে।”
“অহংকারী নারী কখনো প্রেমে নয়, কেবল প্রশংসায় বিশ্বাস করে।”
“চেহারার অহংকার তখনই ভাঙে, যখন আয়নার বদলে মানুষ তার ব্যবহারে মুখ ফিরিয়ে নেয়।”
“একজন নারী যতই শিক্ষিত হোক না কেন, অহংকার তাকে অসুন্দর করে তোলে।”
“নারীর সৌন্দর্য নয়, ব্যবহারই তাকে সম্মানিত করে—যেখানে অহংকারের কোনো স্থান নেই।”
“অহংকারী নারী নিজের উচ্চতা নিয়ে ব্যস্ত থাকে, কিন্তু সম্পর্কের গভীরতা হারিয়ে ফেলে।”
“নরম চোখ আর গরম ভাষা—এই দুইয়ে অহংকারী নারীর চেহারা সুন্দর হলেও মনটা ফাঁকা।”
রুপের অহংকার নিয়ে উক্তি
রূপের অহংকার যারা করে, তারা একদিন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেরই ছায়াকে চিনতে পারে না।
সৌন্দর্য দেখে মানুষ মুগ্ধ হয় ঠিকই, কিন্তু চরিত্রে প্রেমে পড়ে – রূপের গর্ব মানুষকে একা করে দেয়।
রূপের অহংকার ক্ষণিকের, কিন্তু নম্রতা চিরন্তন – রূপ সময়ের সাথে মুছে যায়, কিন্তু মন ছাপ রেখে যায়।
রূপ দিয়ে কেউ কখনো শ্রদ্ধা অর্জন করতে পারে না, তা পায় ব্যবহার আর মানবিকতায়।
যার মাঝে বিনয় নেই, তার রূপ এক চোখের ধোঁকা মাত্র – মানুষের আসল সৌন্দর্য তার আচরণে।
অহংকার রূপকে বিষে পরিণত করে, আর বিনয় সেটিকে ফুলের মতো করে তোলে।
রূপের ঘন ঘন আয়না বদলানো যায়, কিন্তু মনের দাগ কখনোই সাজগোজে ঢেকে রাখা যায় না।
রূপের গর্ব যারা করে, তারা ভুলে যায়—সময় কাউকেই ছাড় দেয় না।
অহংকারী সৌন্দর্য দেখায়, কিন্তু হৃদয় ছুঁতে পারে না।
রূপ ক্ষণিক, চরিত্র চিরন্তন—তাই রূপ নিয়ে অহংকার নয়, চরিত্র নিয়ে গর্ব করা শোভন।
যে নিজের রূপ নিয়ে অহংকার করে, সে নিজের ক্ষণস্থায়ী সৌন্দর্যের দাসে পরিণত হয়।
রূপ দিয়ে মানুষকে আকৃষ্ট করা যায়, কিন্তু ভালোবাসা পাওয়া যায় না।
রূপের অহংকার যখন বাড়ে, তখন সম্পর্কের মূল্য কমে যায়।
একদিন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে রূপ নয়, মনটাই মূল্যবান মনে হবে।
সৌন্দর্য তখনই অর্থবহ, যখন তা বিনয়ের সঙ্গে প্রকাশ পায়।
অহংকার রূপকে ধ্বংস করে, আর বিনয় রূপকে অনন্য করে তোলে।
রূপ দিয়ে শুরু হতে পারে, কিন্তু মন না জিতলে কিছুই স্থায়ী হয় না।
সৌন্দর্য দিয়ে মানুষকে আকর্ষণ করা যায়, কিন্তু ধরে রাখা যায় কেবল ভালোবাসা আর মাধুর্য দিয়ে।
একদিন বয়স এসে রূপ কেড়ে নেবে, তখন যদি অহংকারটাই সব হয় – তুমি নিঃস্ব হয়ে যাবে।
রূপ দিয়ে পরিচয় হয়, কিন্তু মন দিয়ে সম্পর্ক গড়ে – রূপের অহংকার যত বাড়ে, সম্পর্ক তত ভেঙে পড়ে।
রূপের অহংকার হলো এক ক্ষণিকের মায়া, যা সময়ের স্রোতে মিলিয়ে যেতে বাধ্য। যে সৌন্দর্য আজ তোমাকে মুগ্ধ করছে, কালের পরিক্রমায় তার জৌলুস কমতে থাকবে। তখন তোমার ভেতরের আসল রূপ—তোমার জ্ঞান, বুদ্ধি, চরিত্র—ই তোমাকে অন্যদের মাঝে বাঁচিয়ে রাখবে। বাহ্যিক চাকচিক্যের মোহে অভ্যন্তরীণ সম্পদকে অবহেলা করা বোকামি ছাড়া আর কিছুই নয়।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের রূপের প্রশংসা করা সহজ, কিন্তু সেই রূপ যদি তোমার মনকে অহংকারে পূর্ণ করে তোলে, তবে তা তোমার ব্যক্তিত্বের সৌন্দর্যকে ম্লান করে দেয়। সত্যিকারের সৌন্দর্য বাইরের আবরণে নয়, বরং ভেতরের গুণাবলীতে—সহানুভূতি, দয়া, এবং অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধে—প্রকাশ পায়। রূপের অহংকার তোমাকে অন্যদের থেকে দূরে সরিয়ে দেয়, কারণ অহংকারী ব্যক্তি নিজেকে অন্যদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ মনে করে।
গোলাপের সৌন্দর্য ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু তার সৌরভ দীর্ঘকাল ধরে অনুভূত হয়। তেমনি, মানুষের বাহ্যিক রূপ একসময় মলিন হবে, কিন্তু তার জ্ঞান, কর্ম এবং মানবিক গুণাবলী যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকবে। যারা কেবল তাদের রূপের উপর ভরসা করে, তারা সেই সৌরভের গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারে না যা সময়ের পরীক্ষাতেও অমলিন থাকে।
রূপের অহংকার অনেকটা কাঁচের মতো—একটু আঘাতেও ভেঙে চুরমার হয়ে যেতে পারে। অপ্রত্যাশিত কোনো দুর্ঘটনা, অসুস্থতা অথবা বার্ধক্য তোমার সেই অহংকারের ভিত্তি ভেঙে দিতে যথেষ্ট। তখন তুমি উপলব্ধি করবে যে, যা ক্ষণস্থায়ী তার উপর এত বেশি গুরুত্ব দেওয়া কতটা ভুল ছিল। স্থায়ী সুখ এবং সম্মান অর্জনের জন্য অভ্যন্তরীণ শক্তি এবং গুণাবলী বিকাশের বিকল্প নেই।
যারা কেবল রূপের পূজারী, তারা জীবনের গভীরতর সৌন্দর্য—যেমন প্রকৃতির মনোমুগ্ধকর দৃশ্য, শিল্পের মাধুর্য, কিংবা মানুষের ভালোবাসার উষ্ণতা—উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়। তাদের দৃষ্টি কেবল নিজেদের বাহ্যিক সৌন্দর্যের মধ্যেই আবদ্ধ থাকে। এই আত্মকেন্দ্রিকতা তাদের জীবনকে সংকীর্ণ করে তোলে এবং সত্যিকারের আনন্দ থেকে বঞ্চিত করে।
রূপের অহংকার তোমাকে সাময়িক মনোযোগ এবং বাহ্যিক প্রশংসা এনে দিতে পারে, কিন্তু এটি তোমাকে সত্যিকারের বন্ধু এবং গভীর সম্পর্ক তৈরি করতে বাধা দেয়। যারা তোমাকে কেবল তোমার রূপের জন্য পছন্দ করে, তারা তোমার ভেতরের মানুষটিকে জানতে আগ্রহী নয়। সত্যিকারের সম্পর্ক গড়ে ওঠে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস এবং ভালোবাসার ভিত্তিতে, যা রূপের চেয়ে অনেক বেশি মূল্যবান।
মনে রেখো, পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর মুখটিও একদিন বয়স্ক হবে, সবচেয়ে আকর্ষণীয় শরীরটিও সময়ের সাথে সাথে তার জৌলুস হারাবে। কিন্তু একটি সুন্দর মন, একটি উদার হৃদয় এবং জ্ঞানার্জনের আগ্রহ—এই গুণাবলী সময়ের সাথে সাথে আরও মূল্যবান হয়ে ওঠে। রূপের অহংকার তোমাকে সেই স্থায়ী সম্পদ অর্জনে বাধা দেয়।
রূপের অহংকার অনেকটা নেশার মতো—যা তোমাকে বাস্তবতার থেকে দূরে সরিয়ে রাখে। তুমি নিজের বাহ্যিক সৌন্দর্য্যে এতটাই মগ্ন থাকো যে, জীবনের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দিক—যেমন শিক্ষা, ক্যারিয়ার, এবং মানবিক সম্পর্ক—উপেক্ষা করো। এই মোহ भंग হলে তুমি দেখবে যে তুমি অনেক পিছিয়ে পড়েছো।
যারা তাদের রূপের জন্য গর্বিত, তারা প্রায়শই অন্যদের সৌন্দর্যকে তুচ্ছ করে দেখে। এই ধরনের আচরণ কেবল অন্যদের মনে কষ্ট দেয় না, বরং তোমার নিজের ব্যক্তিত্বকেও সংকীর্ণ এবং বিদ্বেষপূর্ণ করে তোলে। সত্যিকারের সৌন্দর্য হলো অন্যের সৌন্দর্যকে সম্মান করতে পারা এবং সকলের মাঝে ভালো কিছু খুঁজে বের করার মানসিকতা।
পরিশেষে মনে রেখো, রূপ একটি উপহার হতে পারে, কিন্তু এর অহংকার একটি অভিশাপ। এই অহংকার তোমাকে অন্যদের চোখে ছোট করে তোলে এবং তোমার ভেতরের সম্ভাবনাগুলোকে বিকশিত হতে বাধা দেয়। সত্যিকারের সৌন্দর্য হলো সেই আলো যা ভেতর থেকে আসে এবং বাইরের আবরণকে আলোকিত করে তোলে—আর সেই আলো অর্জিত হয় জ্ঞান, সহানুভূতি এবং ভালোবাসার মাধ্যমে, রূপের অহংকারের মাধ্যমে নয়।
অহংকার নিয়ে ইংরেজি উক্তি
“Ego builds walls where love could have built bridges.”🔸 অহংকার দেয়াল তোলে, যেখানে ভালোবাসা গড়তে পারত সেতু।
“The louder your ego speaks, the quieter your wisdom becomes.”🔸 তোমার অহংকার যত জোরে কথা বলে, তোমার প্রজ্ঞা তত নীরব হয়ে যায়।
“Pride is the shadow that follows you until it blocks your own light.”🔸 অহংকার এমন এক ছায়া, যা ধীরে ধীরে তোমার নিজের আলো পর্যন্ত ঢেকে ফেলে।
“Ego doesn’t protect you, it isolates you.”🔸 অহংকার তোমাকে রক্ষা করে না, বরং একাকীত্বে ফেলে।
“Those who kneel before truth never stand tall in pride.”🔸 যারা সত্যের সামনে মাথা নত করে, তারা কখনো অহংকারে মাথা তোলে না।
“The higher your ego rises, the harder your fall becomes.”🔸 তোমার অহংকার যত উঁচুতে উঠে, পতন ততই কঠিন হয়।
“Ego blinds the eyes that could see beauty in others.”🔸 অহংকার সেই চোখকে অন্ধ করে, যা অন্যের সৌন্দর্য দেখতে পারত।
“Pride speaks first, but regret often speaks last.”🔸 অহংকার প্রথমে কথা বলে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত অনুশোচনাই কথা বলে।
“Your ego is the enemy of every real connection.”🔸 তোমার অহংকারই প্রতিটি সত্যিকারের সম্পর্কের শত্রু।
“Let go of your ego before it lets go of your peace.”🔸 তোমার অহংকারকে ছেড়ে দাও, তার আগেই সেটা তোমার শান্তি কেড়ে নেবে।
উপসংহার
অহংকার মানুষকে অন্ধ করে তোলে, আর বিনয় মানুষকে করে শ্রদ্ধেয়। জীবনে সাফল্য আসতেই পারে, কিন্তু সেই সাফল্য যদি অহংকারে পরিণত হয়, তাহলে তা এক সময় সর্বনাশ ডেকে আনে। অহংকার নিয়ে এইসব উক্তিগুলো আমাদের শেখায়—জীবনে বড় হতে হলে আগে ছোট হতে জানতে হয়। তাই চলুন, অহংকার ত্যাগ করে বিনয়ী মনোভাব নিয়ে সুন্দর ও সম্মানজনক জীবন গড়ে তুলি। আপনার প্রিয় উক্তিটি নিচে কমেন্টে লিখে জানাতে ভুলবেন না!


