বৈষম্য — একটি শব্দ, কিন্তু যার প্রভাব অসংখ্য মানুষের জীবনের প্রতিটি কোণায় লেগে থাকে।
জন্ম থেকে শুরু করে সমাজে অবস্থান, পেশা, লিঙ্গ, ভাষা কিংবা বিশ্বাস— সব ক্ষেত্রেই বৈষম্যের বিষবাষ্প মানুষকে ছোট করে, পিছিয়ে দেয়, ভাঙে তার আত্মবিশ্বাস।
আজকের তথাকথিত আধুনিক সমাজেও ন্যায়ের পাশে দাঁড়ানো কঠিন, কারণ বৈষম্য কখনো গোপনে, কখনো প্রকাশ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
এই লেখায় তুলে ধরা হয়েছে কিছু গভীর ও বাস্তবভিত্তিক “বৈষম্য নিয়ে উক্তি”,
যা শুধু অন্যায় দেখলে চোখে আঙুল দেবে না, বরং মানুষের মনে জাগাবে প্রশ্ন — কেন আজও সমান চোখে দেখতে শিখিনি?
“বৈষম্য কখনো সমাজকে গড়ে তোলে না, এটি শুধু মানুষে মানুষে দেয়াল তোলে।”
“যেখানে বৈষম্য আছে, সেখানে মানবতা মুখ লুকায়।”
“গায়ের রঙ, ধর্ম বা পেশা দিয়ে মানুষকে বিচার করা — সভ্যতার মুখে এক নির্মম চপেটাঘাত।”
“যেখানে বৈষম্য আছে, সেখানে সত্যিকারের স্বাধীনতা নেই।” — নেলসন ম্যান্ডেলা
“মানুষে মানুষে বৈষম্য সভ্যতার সবচেয়ে বড় কলঙ্ক।” — রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
“ধনীর সাথে গরিবের, শিক্ষিতের সাথে অশিক্ষিতের বৈষম্য সমাজকে দুর্বল করে।” — কাজী নজরুল ইসলাম
“জাতি, ধর্ম বা বর্ণের নামে বৈষম্য মানুষকে বিভক্ত করে।” — মহাত্মা গান্ধী
“যে সমাজে বৈষম্য আছে, সেখানে শান্তি স্থায়ী হয় না।” — মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র
“বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদই প্রকৃত মানবতার পরিচয়।” — শামসুর রাহমান
“সব মানুষ সমান—এ সত্য অস্বীকার করলে মানবধর্ম অস্বীকার হয়।” — আব্রাহাম লিংকন
“শিক্ষা বৈষম্য দূর করার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।” — মালালা ইউসুফজাই
“বৈষম্যের দেয়াল ভেঙে ফেলতে না পারলে উন্নয়ন অসম্ভব।” — বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
“যেখানে বৈষম্য শেষ হয়, সেখানেই শুরু হয় মানবতার জয়।” — হুমায়ূন আহমেদ
“বৈষম্য কখনোই জন্মগত নয়, মানুষই এটাকে সৃষ্টি করে এবং লালন করে।”
“সমতা যখন নেই, তখন স্বাধীনতা কেবল এক কাগুজে স্লোগান।”
“বৈষম্য যত গভীর, সমাজ ততটাই দুর্বল হয়ে পড়ে।”
“অন্যকে নিচে নামিয়ে তুমি নিজে কখনো উপরে উঠতে পারবে না।”
“বৈষম্য শুধু সংখ্যা বাড়ায় না, বাড়ায় হিংসা, ক্ষোভ ও অসন্তোষের আগুন।”
“বিচার তখনই সঠিক হয়, যখন সকল শ্রেণির মানুষ সমান দৃষ্টিতে দেখা হয়।”
“বৈষম্য ভাঙতে হলে আগে ভাঙতে হবে নিজ ভেতরের অহংকার ও কুসংস্কার।”
“মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব তার মানবতায়, জন্মস্থানে নয়।”
“যে সমাজে বৈষম্য আছে, সেখানে উন্নয়নও পক্ষপাতদুষ্ট হয়।”
“সমতা মানে সবার একরকম হওয়া নয়, বরং সবার প্রতি একরকম সম্মান থাকা।”
“বৈষম্যকে যদি স্বাভাবিক ভাবো, তবে তুমি অন্যায়কে প্রশ্রয় দিচ্ছো।”
“একটি ন্যায্য সমাজ গড়ে ওঠে তখনই, যখন মানুষ মানুষকে মানুষ ভাবে।”
বৈষম্য একটি নীরব হত্যাকারী — এটি মেরে ফেলে আত্মবিশ্বাস, ন্যায়বোধ, আর সম্মানের জায়গা।
যেখানে বৈষম্য থাকে, সেখানে একতা জন্ম নেয় না; বরং বাড়ে ক্ষোভ, বঞ্চনা ও দূরত্ব।
এই উক্তিগুলো আমাদের মনে করিয়ে দেয়, মানুষকে তার মূল্যায়ন হওয়া উচিত কর্মে ও চরিত্রে, নয় কোনো পরিচয়ে।
আসুন, আমরা চিন্তার জগতে, কথায়, আচরণে এবং দৃষ্টিভঙ্গিতে বৈষম্য দূর করার চেষ্টা করি।
কারণ সমাজ শুধু তখনই বদলায়, যখন মানুষ বদলায় — ভেতর থেকে।

