মানুষের জীবনে হাসি এমন এক আশীর্বাদ, যা দুঃখ ভুলিয়ে দিতে পারে মুহূর্তেই। একটি হাসির গল্প শুধু আনন্দ দেয় না, বরং মনকে প্রশান্ত করে, মানসিক চাপও দূর করে। আজকের ব্যস্ত জীবনে একটু হাসি যেন ওষুধের মতো কাজ করে— আর তাই মানুষ সবসময় খোঁজে মজার গল্প, ছোট ছোট কমেডি ঘটনা বা হাস্যরসাত্মক কাহিনি, যেগুলো পড়ে মনের ক্লান্তি দূর হয়। হাসির গল্প পড়লে শুধু মুখেই নয়, মনে-প্রাণেও হাসি ফোটে।
এখানে আপনি পাবেন:
হাসির গল্প ১: “পাকা আম আর বুদ্ধিমান জামাই”
এক গ্রামে এক বয়স্ক মা ছিলেন। তাঁর মেয়ের বিয়ে হয়েছে পাশের গ্রামের এক লোকের সঙ্গে — নাম রহিম।
রহিম ছিলেন খুব “বুদ্ধিমান”, অন্তত নিজের ধারণা তাই!
একদিন শাশুড়ি তাকে ডেকে বললেন,
“বাবা রহিম, উঠোনে পাকা আমগুলো গাছ থেকে পড়ছে। একটু গিয়ে দেখে আসো, কতটা পেকেছে।”
রহিম গিয়ে দেখে এল, কিন্তু ফিরে এসে গম্ভীর গলায় বলল,
“আম তো পেকেছে, কিন্তু গাছের উপরে বসে আছে। নিচে নামেনি।”
শাশুড়ি বললেন, “তাহলে একটা লাঠি দিয়ে নামিয়ে আনো।”
রহিম লাঠি হাতে গেল, আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল,
“আম গাছের উপরে, লাঠি আমার হাতে — কিন্তু যদি লাঠি ছুঁড়ি, লাঠিটাই তো উঠে যাবে, আমি নিচে পড়ে থাকব!”
শাশুড়ি অবাক হয়ে বললেন, “তুমি কী করবে তাহলে?”
রহিম চোখ ঘুরিয়ে বলল,
“আপা, আমি এখন নিচে শুয়ে মুখ খুলে রাখি, যেটা নিজে পড়বে, সেটাই খাব!”
শাশুড়ি চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলেন, তারপর চুপচাপ ভেতরে চলে গেলেন।
মেয়েকে বললেন,
“তোর স্বামী যদি এমনই বুদ্ধিমান হয়, তাহলে তো আমার সব গাছই বিপদে পড়বে!” 😂
শেষ কথা:
গ্রামে এমন “বুদ্ধিমান” মানুষ সর্বত্র আছে —
যাদের কাজ না করার হাজারো বুদ্ধি আছে,
কিন্তু কাজ করার একটাও নেই! 😄
হাসির গল্প ২: “ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন”
একদিন গ্রামের এক রোগী শহরের ডাক্তারের কাছে গেল।
রোগীর নাম ছিল করিম।
ডাক্তার জিজ্ঞেস করলেন,
“কি হয়েছে আপনার?”
করিম বলল,
“ডাক্তার সাহেব, আমি যেদিন ভাত খাই, সেদিন পেট ব্যথা হয়!”
ডাক্তার একটু চিন্তা করে বললেন,
“তাহলে আপনি ভাত না খেলে কেমন থাকেন?”
করিম বলল,
“তাহলে তো খুব ভালো থাকি!”
ডাক্তার হাসি চেপে বললেন,
“তাহলে ভাত খাবেন না!”
করিম অবাক হয়ে বলল,
“না ডাক্তার সাহেব, আমি ওষুধ খেতে এসেছি, পরামর্শ নিতে না!”
ডাক্তার এবার গম্ভীর হয়ে প্রেসক্রিপশন লিখলেন—
“রোগীর চিন্তাভাবনা বন্ধ করা দরকার, নইলে ওষুধেও কাজ হবে না!” 😂
শেষ কথা:
কখনো কখনো হাস্যকর কথাবার্তাই মানুষকে সবচেয়ে বেশি আনন্দ দেয়।
করিমের মতো মানুষরাই জীবনকে সহজ করে রাখে—
কারণ তারা জানে, হাসতে পারা মানে অর্ধেক অসুখ সেরে যাওয়া! 😄
হাসির গল্প ৩: “চশমার খোঁজে”
একদিন গ্রামের মজনু মিয়া বাজারে যাচ্ছিলেন।
রোদ বেশ, তাই তিনি নিজের নতুন চশমা চোখে দিলেন।
পথে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ পকেট হাতড়ে দেখলেন—
চশমা নাই!
আতঙ্কে চিৎকার শুরু করলেন,
“হায় আল্লাহ! আমার চশমা কে নিল রে!”
রাস্তার লোকজন দৌড়ে এল, বলল,
“চাচা, কবে হারিয়েছেন?”
মজনু হাঁপাতে হাঁপাতে বললেন,
“এই তো, চোখে ছিল, এখন নাই!”
সবাই অবাক! কেউ বলল,
“চাচা, ভালো করে দেখেন—চোখেই তো চশমা!”
মজনু রেগে গিয়ে বললেন,
“তোমরা কী ভাবো, আমি পাগল? আমি তো চশমা ছাড়া কিছুই দেখতে পাচ্ছি না!”
এক ছেলে কাছে গিয়ে বলল,
“চাচা, আপনি যা দিয়ে আমাদের দেখছেন, সেটাই চশমা!”
মজনু তখন কপাল ঠুকে বললেন,
“ওরে বাবা! আমি নিজেই চোর!” 😂
শেষ কথা:
অনেক সময় আমরা যেটা খুঁজে বেড়াই, সেটা আসলে আমাদের চোখের সামনেই থাকে।
মজনু মিয়ার মতোই—
জীবনেও এমন অনেক হাসির ঘটনা ঘটে,
যেগুলো ভাবলে এখনো হাসতে হাসতে পেট ব্যথা ধরে যায়! 😄
হাসির গল্প ৪: “বাবার মোবাইল ফোন”
একটা ছোট গ্রামে থাকত সোলেমান মিয়া।
গ্রামের সবাই তাকে বলত “বুদ্ধিমান সোলেমান”, কিন্তু আসলে তিনি ছিলেন এমন বুদ্ধিমান, যে নিজের বুদ্ধিতেই নিজের ক্ষতি করতেন।
একদিন তার শহরে থাকা ছেলে একটা নতুন স্মার্টফোন পাঠাল। সঙ্গে একটা চিঠি লিখে দিল —
“বাবা, এটা স্মার্টফোন। এতে ভিডিও কল করা যায়, ছবি তোলা যায়, গান শোনা যায়। চার্জ দিতে ভুলবে না!”
সোলেমান মিয়া ফোনটা হাতে নিয়ে এমন খুশি হলেন, যেন স্বর্ণের হার পেয়েছেন। কিন্তু সমস্যাটা হলো — ফোন কীভাবে চালাতে হয়, তিনি কিছুই জানেন না!
প্রথমেই তিনি ফোন চালু করতে গিয়ে ভলিউম বোতাম ধরে রাখলেন, তারপর চার্জার লাগিয়ে রাখলেন উল্টো দিক দিয়ে।
দেখে পাশের হাবলু বলল, “চাচা, এটা আপনি চালু না করে মেরে ফেলবেন!”
কিছুক্ষণ পর হাবলু ফোনটা চালু করে দিল। সোলেমান মিয়া উল্লাসে বলল,
“ওরে, এই যন্ত্রটা কথা বলে!”
হাবলু বলল, “চাচা, এতে গুগল আছে। আপনি যেকোনো প্রশ্ন করলে উত্তর দেবে।”
সোলেমান মিয়া চোখ বড় বড় করে বলল, “তাই নাকি? দেখি তাহলে…”
তিনি মুখে ফোন নিয়ে জোরে বললেন,
“গুগল! আমার গরুটা গতকাল থেকে ঘাস খাচ্ছে না, এখন কী খাওয়াব?”
ফোন কিছুক্ষণ চুপ, তারপর গুগলের ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট বলল,
“দুঃখিত, আমি বুঝতে পারিনি।”
সোলেমান মিয়া রেগে গেলেন,
“তুই যদি না বুঝিস, তাহলে তোকে ফোনে রাখলাম কেন রে বাপু?”
হাবলু হাসতে হাসতে লুটোপুটি!
সোলেমান মিয়া রেগে বললেন, “তুই হাসছিস কেন? আমি এখন এর সঙ্গে খবর পড়ব।”
তারপর ইউটিউব খুলে খবর দেখতে গিয়ে ভুলে “মিউজিক ভিডিও” খুলে ফেললেন।
টিভিতে নাচের গান চলছে, গায়িকা গাইছে — “বেবি, তোমার লিপস্টিকে আগুন জ্বলে”!
সোলেমান মিয়া অবাক হয়ে বললেন,
“এই যে খবর পড়ছে, বাংলা বোঝা যায় না কেন?”
হাবলু হাসতে হাসতে বলল, “চাচা, এটা তো খবর না, এটা গান!”
সোলেমান মিয়া একেবারে চুপ।
কিছুক্ষণ পর গম্ভীর গলায় বললেন,
“এই ফোনে খবর শুনে যদি গাইতে হয়, তাহলে আমার রেডিওটাই ভালো ছিল।”
সন্ধ্যায় তাঁর স্ত্রী এসে বললেন, “এই ফোনে ছবি তোলা যায় না?”
সোলেমান মিয়া বললেন, “যায়, কিন্তু আমি শুধু নিজের কান দেখি!”
স্ত্রী অবাক, “কীভাবে?”
তিনি হাসলেন, “আমি সেলফি তুলতে গিয়ে বারবার কানের ছবি তুলেছি, কিন্তু মুখটা আসে না!”
রাতের দিকে তিনি ভাবলেন, “ছেলের সঙ্গে ভিডিও কল করব।”
কিন্তু ভুলে নিজের নম্বরে কল করে ফেললেন!
ফোন বাজছে, আবার রিসিভও হচ্ছে!
তিনি ভয় পেয়ে বললেন,
“হ্যালো! কে কথা বলছে?”
ওপাশ থেকে নিজের গলা শুনে চিৎকার দিলেন,
“হায় আল্লাহ! ফোনে আমি-ই কথা বলছি!”
স্ত্রী দৌড়ে এসে বললেন, “কি হয়েছে?”
তিনি হাঁপাতে হাঁপাতে বললেন,
“এই ফোনটা জাদু! আমি ফোনে নিজেকেই ডেকেছি, আর আমি নিজেই ধরেছি!”
পরের দিন গ্রামের সবাই জানল — সোলেমান মিয়া নিজের সঙ্গে নিজে ফোনে কথা বলেছেন।
সেই থেকে গ্রামের নামই হয়ে গেল “স্মার্টফোনপুর”, আর সবাই হাসলে বলে,
“এই হাসি সোলেমানের ফোনের মতো—নিজেই কল দেয়, নিজেই ধরে!” 😂
শেষ কথা:
মানুষ যদি নিজের ভুলেও হাসতে জানে,
তাহলেই জীবনের দুঃখও সহজে পেরিয়ে যায়।
সোলেমান মিয়ার মতো লোকেরা হয়তো বোকা,
কিন্তু ওরাই জীবনের আসল আনন্দ—
যারা হাসিয়ে যায় অন্যকে, নিজের কান্না লুকিয়ে রেখে।
কমেডি হাসির গল্প
স্কুলের নাম “বুদ্ধির দীপ স্কুল”, কিন্তু ছাত্রদের বুদ্ধি যেন আলাদাই দিশায় চলে।
একদিন প্রধান শিক্ষক ঠিক করলেন, আজ ছাত্রদের “আচমকা পরীক্ষা” নেওয়া হবে।
ক্লাসে ঢুকে বললেন,
“যারা ভালো করে পড়ে আসবে না, তাদের দাঁড় করিয়ে রাখব!”
সবাই চুপচাপ বসে আছে।
শিক্ষক প্রশ্ন করলেন,
“বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি কে?”
একজন ছাত্র হাত তুলে বলল,
“স্যার, আমি মনে করি, আপনি-ই!”
শিক্ষক রেগে গিয়ে বললেন,
“কেন রে?”
ছাত্র বলল,
“কারণ আপনি সব জানেন, সবাই আপনার কথা শোনে, তাই ভাবছিলাম আপনি-ই দেশের মালিক!” 😂
পুরো ক্লাস হেসে গড়াগড়ি!
শিক্ষক গম্ভীর হয়ে বললেন,
“চুপ! এখন দ্বিতীয় প্রশ্ন—
‘মানুষ কেন ঘুমায়?’”
আরেকজন ছাত্র উঠল, বলল,
“স্যার, ঘুম না দিলে আপনার মতো প্রশ্নের উত্তর আমরা কখনো ভাবতেই পারব না!”
শিক্ষক এবার মুখ চেপে হাসি থামানোর চেষ্টা করলেন।
বললেন, “ঠিক আছে, এবার শেষ প্রশ্ন —
‘বুদ্ধিমান ছাত্র কাকে বলে?’”
সবাই চুপ।
একজন ছাত্র হেসে বলল,
“স্যার, যে এমন দিনে স্কুলে আসেই না, যেদিন আচমকা পরীক্ষা হয়!”
শিক্ষক চেয়ার থেকে পড়ে যেতে যেতে বললেন,
“বাহ, তুমি তো বুদ্ধির দীপের আলোই নিভিয়ে দিলে!” 😂
শেষ কথা:
হাসি মানেই বোকামি নয়,
হাসি মানে বুদ্ধির এক অন্য রূপ।
যে হাসতে পারে, সে কষ্ট ভুলে বাঁচতে জানে —
আর যারা এমনভাবে হাসায়,
তারা জীবনকে সুন্দর করে তোলে! 😄
ইসলামিক হাসির গল্প
গল্পের নাম: “মসজিদে খেজুর”
একদিন গ্রামের মসজিদে এক বুড়ো চাচা নামাজ পড়ে বেরিয়ে এলেন।
বাইরে একটা খেজুর গাছ ছিল। গাছের নিচে কিছু খেজুর পড়ে ছিল।
চাচা একটা খেজুর তুলে মুখে দিলেন—
তারপর মনে পড়ল, ওটা তো ওয়াকফের (মসজিদের সম্পত্তি)!
চাচা তাড়াতাড়ি খেজুরটা মুখ থেকে বের করে ফেললেন, কিন্তু ভাবলেন,
“এখন তো খাওয়া শুরু করেছি, ফেলে দিলেও অপচয় হবে!”
তিনি গম্ভীর মুখে বললেন,
“হে আল্লাহ, আমি এটা খাইনি, শুধু স্বাদটা দেখে দেখেছি!” 😂
গল্পের নাম: “ইমামের বুদ্ধি”
একদিন এক ছোট বাচ্চা নামাজে ইমামের পাশে দাঁড়িয়েছিল।
রুকু করার সময় বাচ্চা নিচু হয়ে গিয়ে ইমামের টুপি ফেলে দিল।
ইমাম তাকিয়ে দেখলেন, টুপি মাটিতে, আর বাচ্চা চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে।
নামাজ শেষে ইমাম রাগ করে বললেন,
“বাবা, তুমি টুপি ফেললে কেন?”
ছেলেটা মাথা নিচু করে বলল,
“হুজুর, আমি ভেবেছিলাম এটা সিজদার আগে টুপি নামানোর সুন্নত!” 😂
সবাই হেসে উঠল, আর ইমাম বললেন,
“আলহামদুলিল্লাহ, অন্তত মনোযোগ দিয়ে নামাজ পড়ছো!”
গল্পের নাম: “সিয়ামের কষ্ট”
রমজানে এক দিন এক ছেলে রোজা রেখে বিকেলে বলল,
“মা, রোজা রেখে পেটটা এমন করছে, মনে হচ্ছে ভেতরটা খালি!”
মা বললেন,
“সবাই তো এমনই করে, ধৈর্য ধরো।”
ছেলে বলল,
“ধৈর্য ধরব, ঠিক আছে, কিন্তু আল্লাহকে কি বলব—ভেতরটা একেবারে ঝড় তুলছে!” 😂
শেষ কথা:
ইসলাম মানুষকে শুধু কাঁদতে নয়, হাসতেও শেখায়।
তবে সেই হাসি যেন কাউকে কষ্ট না দেয়, যেন থাকে শিক্ষা আর সৌন্দর্য।
যেমন নবী (সা.) বলেছেন:
“তোমার ভাইয়ের মুখে হাসিমুখে তাকানোও একটি সদকা।”
(তিরমিজি শরিফ)
উপদেশ মূলক হাসির গল্প
এক গ্রামে হাশেম নামের এক বয়স্ক মানুষ ছিলেন।
তিনি খুব ধার্মিক, কিন্তু একটু গোঁড়া স্বভাবেরও ছিলেন।
সবসময় বলতেন—
“আমি কারো মতো নই, আমি আলাদা!”
একদিন তিনি ঠিক করলেন, শহরে গিয়ে চুল কাটাবেন।
দীর্ঘদিন পর গ্রামের নাপিতের বদলে শহরের নামী পার্লারে গেলেন।
নাপিত খুব ভদ্রভাবে বলল,
“চাচা, কেমন কাটব?”
হাশেম মিয়া বললেন,
“আমার মতো কেউ না, তাই একটু ভিন্নভাবে কেটে দিও।”
নাপিত চুপচাপ মাথা দুলিয়ে কাজ শুরু করল।
দশ মিনিট পর চুল কেটে আয়না ধরল।
হাশেম মিয়া দেখেই চমকে উঠলেন—
মাথার একপাশ পুরো টাক, অন্যপাশে লম্বা চুল!
তিনি রেগে বললেন,
“এই কী কেটেছিস?”
নাপিত হেসে বলল,
“চাচা, আপনি তো বলেছিলেন, আপনার মতো কেউ যেন না থাকে—
এখন পুরো এলাকায় এমন চুল আর কারও নেই!” 😂
হাশেম মিয়া গম্ভীর মুখে চুপ করে রইলেন,
তারপর হাসতে হাসতে বললেন,
“বেশ ভালো বলেছিস রে বাপু! জীবনে আলাদা হতে চাইলে আগে বুঝে নিতে হয়, কীভাবে!”
শিক্ষা:
জীবনে “ভিন্ন” হতে গেলে বুদ্ধিও দরকার।
যে আলাদা হতে চায়, তাকে ভাবতে হবে—
তার আলাদা হওয়াটা যেন হাস্যকর না হয়ে মূল্যবান হয়।
গ্রামের হাসির গল্প
গ্রামের নাম ছিল ডুমুরিয়া।
সেখানে থাকত গফুর চাচা—
গায়ে গামছা, কানে পিঁয়াজের দুল, সারাদিন মাঠে কাজ, আর রাতে চায়ের দোকানে আড্ডা।
একদিন গফুর চাচার শহরে থাকা ছেলে একটা নতুন মোবাইল পাঠাল।
স্মার্টফোন!
চিঠিতে লিখল—
“বাবা, এতে ছবি তোলা যায়, গান শোনা যায়, ভিডিও দেখা যায়।”
গফুর চাচা ফোনটা হাতে নিয়ে অবাক!
চাচার বন্ধু কাশেম মিয়াও এল।
দু’জনে ফোন হাতে ঘুরছে, চাচা বলল,
“দেখ কাশেম, এই যন্ত্রে নাকি ছবি ওঠে!”
কাশেম চোখ বড় বড় করে বলল,
“তাহলে এখন গরুর ছবি তুলে রাখলে, গরু হারালে চিনে নেওয়া যাবে!”
গফুর চাচা খুশি!
পরদিন মাঠে গিয়ে নিজের গরুর ছবি তুলল।
তারপর ভাবল, “যেহেতু গরুর ছবি ফোনে আছে, এখন আসল গরুটা মাঠে বাঁধার দরকার কী?”
তাই গরুটা খুলে দিয়ে বলল,
“যা রে, ঘুরে আয়, তোকে আমি ফোনে দেখে রাখব।” 😂
সন্ধ্যায় গফুর চাচা ফোন খুলে কাশেমকে বলল,
“দেখ কাশেম, গরুটা কই!”
কাশেম বলল, “চাচা, ছবি তো আছে, কিন্তু গরু নাই!”
চাচা চোখ কুঁচকে বলল,
“তাই নাকি! তাহলে ছবির গরু তো খাবার খাচ্ছে না, এইটাকে বুদ্ধি বলে!”
সেই দিন থেকে গ্রামের সবাই তাকে ডাকত—
“ফোনে গরু পালা গফুর চাচা!” 😂
শেষ কথা:
গ্রামের মানুষ সরল, কিন্তু তাদের যুক্তি এমন মজার,
যা শুনলে শহরের লোক হাসতে হাসতে চোখে জল এনে ফেলে!
আর গফুর চাচার মতো মানুষরাই শেখায়—
জীবন যদি হাসতে না জানে, তবে ফোনেও গরু দেখা যায় না! 😄
চোরের হাসির গল্প
এক রাতে গ্রামের সবাই গভীর ঘুমে।
চোর গফুর গামছা পরে ঘরের পর ঘরে ঢুকছে —
যার ঘরে ভাতের হাঁড়ি আছে, সে হাঁড়ি খোলে; যার ঘরে নেই, সে দরজা খোলে না।
এমন সময় হঠাৎ পাশের মসজিদে ফজরের আজান শুরু হলো।
চোর হাঁটু গেড়ে বসে পড়ল,
বলল, “আল্লাহ! এইটা কি আমার জন্য আজান দিল?”
নিজের মনে উত্তর দিল,
“না না, নামাজের ডাক, তুই আবার চুরি শেষ করে নামাজ পড়বি!” 😂
চোর হাসতে হাসতে নিজের কাছেই বলল,
“আল্লাহও জানেন, আমি পরিশ্রমী মানুষ—রাতে কাজ করি, দিনে বিশ্রাম নেই।”
ঠিক তখন ঘরের মালিকের ঘুম ভাঙল।
চোর টের পেয়ে বিছানার নিচে ঢুকে গেল।
মালিক টর্চ জ্বালিয়ে বলল,
“কে ওখানে?”
চোর চুপচাপ নিচ থেকে বলল,
“আল্লাহর বান্দা!”
মালিক চিৎকার করে বলল,
“বান্দা হলে বের হয়ে আয়!”
চোর গম্ভীর গলায় বলল,
“না ভাই, আমি রোজা রাখছি, বাইরে বের হলে কাজ মিস হয়ে যাবে!” 😂
শেষে মালিক আর রাগ করতে পারল না, হাসতে হাসতে বলল,
“তুই চোর না, কমেডিয়ান!”
শেষ কথা:
হাস্যরসের ভেতরেও শিক্ষা আছে —
যে মানুষ নিজের ভুলের মধ্যেও হাসতে জানে,
সে একদিন নিজের ভুলও ঠিক করতে পারে।
চোর যেমন রাতে কাজ করে,
তেমনি আমাদেরও উচিত—ভালো কাজের জন্য রাতদিন চেষ্টা করা! 😄
ছোটদের হাসির গল্প
একদিন স্কুলে শিক্ষক বাবুকে জিজ্ঞেস করলেন,
“বাবু, বলো তো, পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুত জিনিস কী?”
বাবু মাথা চুলকিয়ে বলল,
“স্যার, আমার মা!”
শিক্ষক অবাক হয়ে বললেন,
“তোমার মা? কেন?”
বাবু মিষ্টি হেসে বলল,
“কারণ আমি যেই ঘরে দুষ্টুমি করি, মা তখনই এসে হাজির! আলোর গতির চেয়েও দ্রুত!” 😂
পুরো ক্লাস হেসে লুটোপুটি!
শিক্ষকও হেসে বললেন,
“বাবু, তুমি বিজ্ঞানী না হলেও, ভবিষ্যতে হাস্যকবিদ হবেই!”
গল্পের শিক্ষা:
হাসি মানেই বোকামি নয় — হাসি মানে বুদ্ধির খেলা।
বাবুর মতো যারা মজারভাবে চিন্তা করে,
তারা আসলে বুদ্ধিমান — কারণ তারা জীবনকে আনন্দে দেখে! 😄
উপসংহার
হাসি মানুষকে একত্র করে, মনকে হালকা করে, আর জীবনকে করে সুন্দর।
একটি ছোট হাসির গল্প কখনো কখনো বড় দুঃখ ভুলিয়ে দিতে পারে।
তাই প্রতিদিনের জীবনে একটু হাসির সময় বের করো, মজার গল্প পড়ো, বন্ধু-পরিজনকে শোনাও।
যে মানুষ হাসাতে জানে, সে পৃথিবীকে একটু সুন্দর করে তোলে।
মনে রেখো—
“হাসিই হচ্ছে এমন একটি ভাষা, যা সবার মনে আনন্দ ছড়ায়, আর জীবনের সব কষ্টকে মুহূর্তে ভুলিয়ে দেয়।”