ইসলামে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া একটি মৌলিক দায়িত্ব। কুরআন ও হাদীসের বহু স্থানে অন্যায়কারীদের বিরুদ্ধাচরণ এবং নিপীড়িতের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। একজন প্রকৃত মুসলমান কেবল নিজের ইবাদত নিয়ে ব্যস্ত থাকবে না, বরং সমাজে যে কোনো ধরণের জুলুম ও অন্যায়কে প্রতিহত করতে সচেষ্ট থাকবে। এই প্রবন্ধে তুলে ধরা হলো কিছু মূল্যবান ইসলামিক উক্তি যা অন্যায়ের প্রতিবাদ এবং ন্যায় প্রতিষ্ঠার ওপর আলোকপাত করে।
“তোমাদের কেউ যদি কোনো মন্দ কাজ দেখে, সে যেন তা তার হাত দিয়ে প্রতিহত করে। যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে মুখ দিয়ে বলবে। আর যদি এটাও না পারে, তাহলে অন্তরে ঘৃণা করবে—এটাই ঈমানের সর্বনিম্ন স্তর।”— সহীহ মুসলিম: ৪৯
“হে মুমিনগণ! তোমরা ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকো, আল্লাহর জন্য সাক্ষ্য দাও, যদিও তা তোমাদের নিজেদের, পিতা-মাতা বা আত্মীয়স্বজনের বিরুদ্ধেই যায়।”— সূরা নিসা: ১৩৫
“তোমরা অন্যায়কারীদের দিকে ঝুঁকো না, তা হলে আগুন তোমাদেরকে স্পর্শ করবে।”— সূরা হুদ: ১১৩
“জুলুম থেকে বেঁচে থাকো, কেননা জুলুম কিয়ামতের দিনে অন্ধকার হয়ে দাঁড়াবে।”— সহীহ বুখারী: ২৪৪৭
“যে ব্যক্তি একজন অত্যাচারীর সামনে সত্য কথা বলে, সে শহীদ।”— সুনান আবু দাউদ: ৪৩৪৪
“আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা জুলুমকে নিজের উপর হারাম করেছেন এবং তা তোমাদের মধ্যেও হারাম করে দিয়েছেন।”— সহীহ মুসলিম: ২৫৭৭
“নিশ্চয়ই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা ন্যায়বিচার, সদাচরণ এবং আত্মীয়-স্বজনকে দান করার নির্দেশ দেন এবং অশ্লীলতা, অন্যায় ও সীমালঙ্ঘন নিষিদ্ধ করেন।”— সূরা নাহল: ৯০
“যে ব্যক্তি একটি অন্যায় দেখে এবং তা প্রতিরোধ করে না, সে সেই অন্যায়ে অংশগ্রহণকারীর মতো।”— ইসলামিক নীতিবাক্য
“তোমরা সত্য বলবে, যদিও তা তিক্ত হয়।”— সুনান ইবনে মাজাহ: ৪০০৫
“আল্লাহ জুলুমকারীদেরকে পছন্দ করেন না।”— সূরা আলে ইমরান: ৫৭
“যে কেউ কোন মজলুমের পাশে দাঁড়ায়, আল্লাহ তার পাশে দাঁড়ান।”— তিরমিযি: ১৯৩০
“কেউ যদি কোনো মজলুমের উপর জুলুম করে, আর তুমি চুপ থাকো, তবে তুমিও জুলুমে শরিক।”— ইসলামী নীতিবাক্য
“সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো, আর অন্যায়ের প্রতিবাদ করা ঈমানের দাবি।”— ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে
“সর্বোত্তম জিহাদ হল, একজন জালিম শাসকের সামনে সত্য কথা বলা।”— সুনান নাসায়ী: ৪২০৯
“যেখানে ন্যায় নেই, সেখানে শান্তি থাকে না। আর ইসলাম শান্তির ধর্ম।”— ইসলামিক দর্শন অনুযায়ী
ইসলাম একমাত্র ধর্ম যা কেবল ইবাদতের প্রতি গুরুত্ব দেয় না, বরং সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠা এবং জুলুম ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার কথা বলে। আমাদের প্রত্যেকের উচিত অন্যায়ের মুখোমুখি হলে চুপ না থেকে, ইসলামি আদর্শে তার প্রতিবাদ করা।

