তেলবাজি— শব্দটা শুনলেই এক ধরনের কৃত্রিমতা, অস্বস্তি আর উদ্দেশ্যপ্রসূত আচরণের ছবি চোখে ভেসে ওঠে। আজকের সময়ের অনেক কর্মস্থল, সামাজিক পরিবেশ এমনকি আত্মীয়তা বা বন্ধুত্বেও তেলবাজির ছোঁয়া স্পষ্ট। যোগ্যতা, সততা বা পরিশ্রমের চেয়ে প্রশংসার ছলনা দিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রবণতা যেন বেড়েই চলেছে।
এমন বাস্তবতার ভিড়ে তেলবাজি নিয়ে কিছু বাস্তব, ব্যঙ্গাত্মক বা চিন্তাশীল উক্তি আমাদের ভাবতে শেখায়। এই লেখায় তেমন কিছু কথার সমাহার তুলে ধরা হয়েছে— যেগুলো আপনি সহজেই ব্যবহার করতে পারেন ফেসবুক পোস্ট, ক্যাপশন, বক্তৃতা বা রিল কনটেন্টে।
এখানে আপনি পাবেন:
তেলবাজি নিয়ে উক্তি
“তেলবাজি হচ্ছে আজকের সমাজের নরম ঘুষ — কেউ বলে না, তবুও সবাই দেয়।”
“যেখানে তেলবাজদের কদর বেশি, সেখানে মেধাবীরা কোণায় পড়ে থাকে।”
“তেল মেখে যারা উপরে ওঠে, তারা পরে সত্যের সোপানে পা রাখতে পারে না।”
“প্রশংসা আর তেলবাজির মাঝে সূক্ষ্ম পার্থক্য আছে — একটায় হৃদয় থাকে, আরেকটায় উদ্দেশ্য।”
“আজকাল যোগ্যতা দিয়ে নয়, তোষামোদ দিয়েই পথ তৈরি হয়!”
“তেলবাজদের মুখে মধু থাকে, আর মনে থাকে হিসাব।”
“একজন তেলবাজ কখনো স্পষ্ট কথা বলবে না, কারণ তার আয়ু নির্ভর করে কার পেছনে কতটুকু তেল আছে তার উপর।”
“তেল যত ঘন, সুযোগ তত সহজ। এটাই কর্পোরেট বাস্তবতা।”
“তেলবাজদের তালি শুনে বোসরা ভুলে যায়, কারা আসলে কাজ করে।”
“তেলবাজির বিশ্বকাপ হলে, আমরা অনেক গোল্ড মেডেল পেতাম!” 😄
“তেলবাজরা প্রথমে আপনার পাশে দাঁড়ায়, তারপর আপনার জায়গাটাই দখল করে নেয়।”
“যোগ্য লোকের প্রয়োজন নেই, যদি পাশে থাকে একজন ভালো তেলবাজ।”
তেল মারা নিয়ে উক্তি
“তেল মারা এখন মেধার প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, বরং একে ছাপিয়ে যাওয়া চালাকি। যোগ্যতা যেখানে হার মানে, তোষামোদ সেখানে বিজয়ী হয়।”
“একজন তেল মারা মানুষ বসকে খুশি করতে পারে, কিন্তু নিজের বিবেককে নয়।”
“যে নিজের কাজ দিয়ে মন জয় করতে পারে না, সে তেল মেরে সুযোগ খোঁজে।”
“তেল মারা মানুষের হাসি হয় মিষ্টি, কিন্তু তা হয় উদ্দেশ্যপূর্ণ।”
“তেল মারার হাত যতই নরম হোক, উদ্দেশ্য কিন্তু সবার চেয়ে ধারালো।”
“আজকের অফিস কালচারে তেল মারাটাই যেন প্রমোশনের সংক্ষিপ্ত কোর্স!”
“যে তেল মারে, সে সুযোগ পেলেই ছুরি মারবে — শুধু জায়গা আর সময়ের অপেক্ষা।”
“তেল মারা লোকজনের একটাই ট্যালেন্ট — কাকে কখন তুষ্ট করলে নিজের কাজ আদায় হবে।”
“তেল মারা হচ্ছে মুখে মধু, মনে ফন্দি।”
“তেল মারারও একটা সীমা থাকা উচিত, নইলে নিজের আত্মসম্মানটাই হারিয়ে যায়।”
“তেল মারা মানুষ কখনো আপনাকে ভালোবাসে না, সে ভালোবাসে আপনার চেয়ারকে।”
“কাজ জানলে তেল মারা লাগে না, তেল মেরে চললে কাজ শেখাও বন্ধ হয়ে যায়।”
উপসংহার
তেলবাজি শুধু একজন মানুষের চরিত্রকে নয়, গোটা সমাজের ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়। যখন মেধার চেয়ে তোষামোদ বেশি গুরুত্ব পায়, তখন প্রকৃতভাবে যারা যোগ্য— তারা পড়ে থাকে অবহেলায়। এসব উক্তিগুলো সেই কথাগুলো, যা হয়তো আমরা ভেবে বলি না, কিন্তু মনে মনে উপলব্ধি করি।
তাই যদি কখনও কারও পোস্টে বা কথায় এমন কিছু শুনে নিজেকে চিনতে পারেন, তাহলে সৎ থাকার চেষ্টা করুন। কারণ তেলবাজি দিয়ে হয়তো সাময়িক লাভ হয়, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে তা কখনোই সম্মানের জায়গা তৈরি করতে পারে না। সোজা কথা, সত্য থাকুক সামনে, তেলবাজি থাকুক প্রশ্নের কাঠগড়ায়।

