নানা এবং নাতির সম্পর্ক পৃথিবীর সবচেয়ে মিষ্টি সম্পর্কগুলোর মধ্যে অন্যতম। এখানে থাকে অগাধ স্নেহ, আদর এবং বন্ধুত্বের এক অপূর্ব মেলবন্ধন। নানা তার নাতির মধ্যে খুঁজে পান ফেলে আসা দিনের প্রতিচ্ছবি, আর নাতি খুঁজে পায় একজন অভিজ্ঞ অভিভাবক ও পরম বন্ধুকে। এই ভালোবাসার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন, তবুও নিচে উক্তি দেওয়া হলো, যা নানা-নাতির গভীর ভালোবাসার চিত্র ফুটিয়ে তুলবে:
নানার কোলে মাথা রেখে যখন আমি রূপকথার গল্প শুনি, তখন আমার মনে হয় যেন আমি এক অন্য জগতে হারিয়ে গেছি। সেই মুহূর্তগুলো আমার শৈশবের সবচেয়ে মূল্যবান স্মৃতি।
একজন নাতির চোখে তাঁর নানু মানে সুপারহিরো, যিনি কোনো ম্যাজিক ছাড়াই ভালোবাসা দিয়ে সব সমস্যার সমাধান করে দেন।
নানার কোলে বসে নাতির খুশি হওয়ার যে দৃশ্য, তা কোনো দামী খেলনা বা বড়ো শহরের উজ্জ্বল আলো কখনো দিতে পারে না।
নানার মুখে বারবার শোনা সেই পুরোনো গল্পগুলো নাতির মনে গেঁথে যায় আজীবনের জন্য। সেই গল্পেই গড়ে ওঠে জীবনের প্রথম শিক্ষা।
নানা আর নাতির সম্পর্কটা এমন, যেখানে শব্দের চেয়েও চোখের ভাষা বেশি কথা বলে। এক চিলতে হাসি, একটুখানি ছোঁয়া—সবই ভালোবাসার ভাষা।
নানার হাত ধরে হাঁটা শেখা শুধু হাঁটার শিক্ষা নয়, সেটা জীবনের প্রথম নিরাপত্তা শেখা। সেই ভালোবাসার ছায়া নাতি সারাজীবন বয়ে বেড়ায়।
নাতির প্রথম দুষ্টুমি যাকে হাসিয়ে তোলে, তিনি হলেন নানা। কারণ তিনি জানেন—এই দুষ্টুমিতেই লুকিয়ে আছে ভালোবাসার আনন্দ।
নানার জন্য নাতি মানে জীবনের শেষদিকে ফিরে পাওয়া এক টুকরো শৈশব, আর নাতির জন্য নানু মানে জীবনের শুরুতেই এক আশ্রয়দাতা ফেরেশতা।
নাতির জীবনে প্রথম খেলাধুলার সঙ্গী, প্রথম বাইরের দুনিয়া দেখা মানুষটি অনেক সময়ই তাঁর নানু। সেই সম্পর্কটা কখনোই মুছে যায় না।
সময় বদলে যায়, মানুষ বদলে যায়, কিন্তু নানার প্রতি নাতির ভালোবাসা আর নাতির প্রতি নানার স্নেহ—এগুলোই থাকে চিরকালীন, অটুট, অমূল্য।
আমার দুষ্টুমিতে যখন সবাই বিরক্ত হয়, তখন একমাত্র নানাই আমার হয়ে মিষ্টি হেসে বলেন, “ও তো ছোট মানুষ, একটু ভুল তো হবেই।” এই একটি কথাতেই আমার সব অভিমান দূর হয়ে যায়।
নানা যখন বাজারে যান, আমার জন্য সবসময় কিছু না কিছু নিয়ে আসেন। সেই ছোট্ট উপহারগুলোতেও মিশে থাকে তাঁর অগাধ ভালোবাসা, যা আমার হৃদয় ছুঁয়ে যায়।
আমি যখন কোনো সমস্যায় পড়ি, নানাই প্রথম ব্যক্তি যার কাছে আমি ছুটে যাই। তাঁর শান্ত পরামর্শ আর দৃঢ় মনোবল আমাকে সব বাধা অতিক্রম করতে সাহস যোগায়।
নানার সাথে কাটানো প্রতিটি মুহূর্ত যেন এক অমূল্য সম্পদ। তাঁর সাথে হাসির গল্প, পুরনো দিনের স্মৃতিচারণ আমার মনকে আনন্দে ভরিয়ে তোলে।
আমার সাফল্যের খবরে নানার উজ্জ্বল মুখ দেখলে আমার মনে হয় যেন আমি পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ। তাঁর আশীর্বাদই আমার সব অর্জনের মূল ভিত্তি।
নানা-নাতির এই সম্পর্ক যেন এক অবিচ্ছেদ্য বন্ধন। সময়ের সাথে সাথে এই ভালোবাসা আরও গভীর হয়, যা আমার জীবনের এক অমূল্য পাওয়া।
আমার জীবনে নানার উপস্থিতি একটি বটবৃক্ষের ছায়ার মতো। তাঁর স্নেহ আর ভালোবাসার আশ্রয়ে আমি সবসময় নিরাপদ অনুভব করি। এই সম্পর্ক চিরকাল অটুট থাকুক।

