রোগ-ব্যাধি মানুষের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। শারীরিক ও মানসিক কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে আমরা চিকিৎসার পাশাপাশি আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই। কুরআন ও সহিহ হাদিসে বহু দোয়া রয়েছে, যা রোগ থেকে সুরক্ষা ও আরোগ্যের জন্য পড়া হয়। এর মধ্যে একটি বিশেষ দোয়া রয়েছে, যা মৃত্যু ছাড়া সব ধরনের রোগ থেকে মুক্তি লাভের জন্য নবী করিম ﷺ সুপারিশ করেছেন।
এখানে আপনি পাবেন:
সহিহ হাদিসের দোয়া
আবু দাউদ ও ইবনে মাজাহ-তে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:
“যে ব্যক্তি সকালে তিনবার এবং সন্ধ্যায় তিনবার এই দোয়া পড়বে, আল্লাহ তাকে মৃত্যু ছাড়া সব ধরনের রোগ থেকে মুক্তি দেবেন।”
আরবি:
بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي السَّمَاءِ، وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
বাংলা উচ্চারণ:
বিসমিল্লাহিল্লাজি লা ইয়াদুররু মা’আসমিহি শাইউন ফিল আরদ্বি ওয়া লা ফিস সামা-ই, ওয়া হুয়াস সামীয়ুল আলীম।
অর্থ:
আমি আল্লাহর নামে শুরু করছি, যার নামের বরকতে আকাশ ও জমিনের কোনো কিছুই ক্ষতি করতে পারে না, আর তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
রেফারেন্স:
আবু দাউদ: হাদিস ৫০৮৮, ইবনে মাজাহ: হাদিস ৩৮৬৯, সহিহ আল-জামি: ৬৪২৬
পড়ার নিয়ম
- প্রতিদিন সকালে (ফজরের পর) তিনবার পড়া।
- প্রতিদিন সন্ধ্যায় (মাগরিবের পর) তিনবার পড়া।
- পড়ার সময় অর্থ মনে রেখে মনোযোগ সহকারে পড়া।
দোয়ার উপকারিতা
- মৃত্যু ছাড়া সব ধরনের রোগ ও ক্ষতি থেকে সুরক্ষা।
- শয়তান ও জিনের অনিষ্ট থেকে রক্ষা।
- দৈনন্দিন জীবনে আত্মবিশ্বাস ও নিরাপত্তা বৃদ্ধি।
- আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা করার শিক্ষা।
অন্যান্য রোগ থেকে সুরক্ষার জন্য করণীয় (ইসলামি দৃষ্টিতে)
- নিয়মিত দোয়া ও যিকির করা।
- পবিত্র থাকা — ওযু অবস্থায় বেশি সময় থাকা।
- সদকা করা — দান রোগ দূর করার অন্যতম মাধ্যম।
- হারাম কাজ থেকে বিরত থাকা।
সাধারণ প্রশ্নোত্তর
এই দোয়া কি অসুস্থ হওয়ার পর পড়া যাবে?
হ্যাঁ, তবে মূলত এটি প্রতিরোধমূলক দোয়া। আগে থেকে নিয়মিত পড়া উত্তম।
দোয়া কি বাংলায় পড়া যাবে?
অর্থ মনে রেখে বাংলায় পড়া যাবে, তবে আরবিতে পড়া সুন্নত।
শিশুদের কি এই দোয়া শেখানো যাবে?
অবশ্যই, এটি ছোটদের জন্যও খুব উপকারী।
উপসংহার
এই দোয়া আমাদের জীবনে এক বিশেষ সুরক্ষা দেয়, যা মৃত্যু ছাড়া সব রোগ ও অনিষ্ট থেকে বাঁচায়। প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় এটি পড়া অভ্যাসে পরিণত করলে আল্লাহর রহমত লাভ করা সম্ভব।
আজ থেকেই এই দোয়া সকাল-সন্ধ্যায় পড়া শুরু করুন এবং আপনার পরিবার ও প্রিয়জনদেরও শেখান, যাতে তারাও আল্লাহর এই বরকতময় সুরক্ষার অংশীদার হতে পারে।

